বিএনপি’র চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি ও সরকার পতনের বিভিন্ন কৌশলী আন্দোলনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক মেধাবী ও রাজপথের আলোচিত ১৯৮৯-৯০ সেশনের ছাত্রলীগের নগর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে বৃহস্পতিবার ২৬ অক্টোবর দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের আব্দুল খালেক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সমন্বয় পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের উপ অর্থ সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবার লিখিত বক্তব্যে বলেন,সাগর নদীগিরি ও পীর আউলিয়াদের পুণ্যভূমি চট্টগ্রামের সঙ্গে সমস্ত আবহে রয়েছে বিপ্লবের মন্ত্র ও ইতিহাস।
সিপাহি বিদ্রোহের হাবিলদার রজব আলী থেকে শুরু করে সূর্য সেন,প্রীতিলতার গৌরবদীপ্ত রক্তাক্ত সংগ্রামের অধ্যায় হয়ে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রামের ললাটে গৌরবের সুবর্ণ তিলক এঁকে দিয়েছে। উপরন্তু ৭৫ এর মর্মান্তিক পৈশাচিক ট্র্যাজেডির পর আবার দেশের গণতন্ত্রকি সংগ্রামে সিপাহসালার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশরত্ন ও জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে জনসভা করেছিলেন এই বীর প্রসবিনী চট্টগ্রামে ১৯৮২ সালে আউটার স্টেডিয়ামে।
আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ,শেখ হাসিনা,গণতান্ত্রিক সংগ্রামে জাতির প্রতিটি ক্রান্তিকালের টার্নিং পয়েন্টে বীর চট্টলার ঐতিহাসিক সংগ্রামী ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে। ৩য় বারের মতো নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে বলেছিলেন ‘নিজের শহর’ এবং চট্টগ্রামের দায়িত্ব নিজেই গ্রহণ করেছেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন, আজ এর জাজ্বল্যমান দৃষ্টান্ত এখন আমাদের চারপাশে মধ্য গগনের সূর্যের মতো প্রদীপ্ত।
সংবাদ সম্মেলনে হেলাল আকবর বাবর আরও বলেন,আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ও বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড,আমরা কথায় নয় মানুষের জন্য কাজে বিশ্বাসী। আমরা বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের মতো ষড়যন্ত্রের নীল নকশায় ব্যস্ত নই,দেশকে পাকিস্তান বানানোর পায়তারায় বিশ্বাসী নই কিংবা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর রাজনীতিতে মত্ত নই। যার বাস্তব প্রমান মিলে কিছু পরিসংখ্যানের মাধ্যমেই। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ২০২৪ নির্বাচনকে ঘিরে দেশী-বিদেশী নানামুখী চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিশেষ করে বি.এন.পি-জামায়াত,যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য সহ বিভিন্ন দেশ এই চক্রান্তের সাথে জড়িত।
এখানে আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত দলীয় সরকারের অধীনেই হবে। এর কোন ব্যর্থই হবে না। চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করলে বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরের মতো চট্টগ্রামেও ৮৯-৯০ সেশনের ছাত্র নেতারাও ঘরে বসে থাকবে না। অতীত ছাত্র রাজনীতির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যে কোন চক্রান্ত ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ৮৯-৯০ সেশনের ছাত্র নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সাবেক ছাত্র নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থেকে সকল চক্রান্ত সড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বান্দরবান থেকে সুন্দরবন ও টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত বিএনপির নৈরাজ্য ঠেকাতে আমরা অতীতের রাজপথের অর্জিত আন্দোলনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সমস্ত যড়যন্ত্র রুখে দেবো। চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
বর্তমান সরকারের সফলতার দিগদর্শন তুলে ধরে সাবেক এই ছাত্র নেতা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ট্যানেল নির্মাণ সাফল্যের মুকুটে আরেক পালক। এই ট্যানেল নির্মাণের ফলে চাট্টগ্রামের গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে,চট্টগ্রাম এখন এক সিটির দুই শহর। মহেশখালির মাতারবাড়িতে বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ওই এলাকায় একডি ডিপ-সি পোর্ট। উপরন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম ফোর লেনের হাইওয়ে ৬ লেনের করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ। এর ফলে সমগ্র পূর্ব এশিয়া সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। আর এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ের কানেকটিভিটির অংশীদার হবে।
১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর থেকে অন্তত ২১ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা তাকে নতুন উদ্যমে জীবিত করে তোলে।আকাশচুম্বি চ্যালেঞ্জ আর ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে অগ্রগতির নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করে সাফল্য ও উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে খাদ্য নিরাপত্তা,সমুদ্র বিজয়,শিক্ষা,স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি,নারীর ক্ষমতায়ন,অর্থনৈতিক উন্নতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বেড়েছে জ্বালানি আর ডলারের দাম। বিপরীত উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে চলমান মেগা প্রকল্পের ব্যায় বন্ধ ছিল না। গত ১৪ বছরের সাফল্য এক সঙ্গে উঠে আসে। নভেম্বরে একসাথে ১০০ সেতু উদ্বোধন,দুর্গম পার্বত্য এলাকাসহ চট্টগ্রাম বিভাগেই চালু হয় ৪৫টি সেতু। সিলেটে ১৭,বরিশালে ১৪, ময়মনসিংহে ছয়, গোপালগঞ্জ,রাজশাহী ও রংপুরে পাঁচটি করে এবং ঢাকা বিভাগে চালু হয় নতুন দুটি সেতু। কক্সবাজার জেলা ঘিরেই ২৯ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে। ৫০ জেলায় ১০০ নতুন সড়ক উদ্বোধন করে সরকার, যানজটের ঢাকায় উড়াল দেয় মেট্রোরেল।আওয়ামীলীগ গত ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশকে একটি দুর্বল অর্থনৈতিক দেশ থেকে সব শর্ত পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পদার্পন করিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন,যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে শুরু করে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পদ্মা সেতু,পদ্মা সেতুতে রেলপথ স্থাপমন।