“ফেসবুক গ্রুপ WAB ও একটি দুস্পাপ্য ঔষধের গল্প”

বরগুনার আমতলি এলাকার জসিম উদ্দিনের সাত বছর বয়সী মেয়ে সুবাইতা তাসনিম জারা। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থী। জীবনের শুরুতেই বিরল এক রোগে আক্রান্ত হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শিশুটি। মাত্র কয়েক দিন আগেও দূরন্ত জারা এদিক ওদিক ছুটে বেড়িয়েছে। অথচ গত ১৫ নভেম্বর থেকে ঢাকা মেডিকেলের আইসিউতে ভর্তি। বাইরে বাবা-মা জারার অপেক্ষায়।

শিশুটির বাবা মেয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ‘আইসোপ্রিনোসি’ নামের ঔষধটি দেশের কোথাও না পেয়ে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করেন। সেই পোস্টে পুলিশ সদস্য ও ওয়াবের প্রতিষ্ঠাতা এস এম আকবরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জসিমের বন্ধু আজমির। পরবর্তীতে ঔষধটির সন্ধানে ওয়াবের গ্রুপে পোস্ট করা হয়। ওয়াবের পোস্টটি দেখে ওয়াব এর সদস্য রাহাতা খান ভারতীয় নাগরিক ও অ্যামেচার রেডিও অপরেটর (হ্যাম) আম্বারি নাগ বিশ্বাসকে বিষয়টি জানান। তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লীতে ঔষধটির সন্ধান পান। পরবর্তীতে দুই পাতা ঔষধ কিনেন। কিন্তু বাংলাদেশে দ্রুত সময়ে সরাসরি আনার জন্য কাউকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরবর্তীতে ঔষধ আনার জন্য আবারও পোস্ট দেন আকবর ও কবিরুল সাগর। পোস্টটি দেখে এগিয়ে আসেন ভারতে অবস্থান করা ওয়াবের সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান খান। তিনি ওই দিনই দেশে আসার সময়ে এই ঔষধটি নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে ওয়াবের প্রতিষ্ঠাতা এস এম আকবর বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে ঔষধ সংগ্রহের চেষ্টা করি। দেশের ভেতরে সম্ভাব্য প্রতিটি স্থানে ওয়াবের সদস্যরা খোঁজেন। কিন্ত পাওয়া যায়নি। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ওয়াব গ্রুপের সদস্যরাও ঔষধটির খোঁজ করেন। মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। পরে ভারতের দুটি রাজ্যে পাওয়া যায়। আমরা দিল্লীতে ভারতীয় নাগরিক আম্বারি নাগের সহযোগিতায় ঔষধ সংগ্রহ হয়। পরবর্তীতে তিনি ১০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। কারণ যে সময়ে তিনি ঔষধ পেয়েছেন তার এক ঘন্টা পরেই ওয়াহিদুজ্জামানের বিমানের ফ্লাইট ছিলো। এই সময়ে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে ঔষধটি তার হাতে দেন। ওয়াহিদ ঢাকায় আসার পরে ওয়াবের সদস্যরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়। এমনকি এই ঔষধের মূল্যও ওয়াবের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে জানান।

©  2019-2024 All Rights Reserved. Design By Ghost